ভ্যাকসিনেশনের কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে গোটা দেশে। সমস্যা হচ্ছে, যত মানুষ ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য টিকাকরণ কেন্দ্রে হাজির হচ্ছেন রোজ, তত ভ্যাকসিন হাসপাতালের ভাঁড়ারে নেই। ফলে বহু মানুষ একটি ডোজ নিয়ে বসে আছেন, দ্বিতীয় ডোজ পাননি নির্ধারিত দিনে। এর ফলে কি কোনও অসুবিধে হতে পারে?
এখনও পর্যন্ত আমাদের হাতে যা তথ্য আছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে দেড় মাসের মধ্যে ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ নিয়ে নিলে কোভিড থেকে সর্বাধিক সুরক্ষা মিলবে। তার চেয়েও দেরি হলে কী হবে, তা নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট ধারণা বিশেষজ্ঞদেরও নেই। তাই তাঁরা পরামর্শ দিচ্ছেন মাথা ঠান্ডা রাখার। প্যানিক করবেন না, খোঁজ রাখুন কবে টিকা মিলবে ফের, সেদিনই তা নিয়ে নিন।
এখনও পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে যে দেরি হলেও ভ্যাকসিনের সেকেন্ড ডোজ নিলেই চলবে, ইমিউনাইজেশন বাতিল করে আবার প্রথম ডোজ থেকে শুরু করার দরকার নেই। তা ছাড়া সমস্ত টিকা নির্মাতাই উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়েছেন। ১ তারিখ থেকে গণ টিকাকরণ শুরু হলেও চাপ সামলে দেওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই আরও বেশ কিছু নতুন সংস্থার টিকা বাজারে আসবে – ফলে বাড়তি চাহিদা সামাল দিয়ে দেওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কেন টিকার দু’টি ডোজ দেওয়া হয়?
এখনও পর্যন্ত বাজারে করোনা ভাইরাসকে কাবু করার যে ক’টি টিকা আছে, সেগুলির দু’টি ডোজই মিলছে। প্রথমটিকে বলা হয় ‘প্রাইমিং ডোজ’, পরেরটি ‘বুস্টিং ডোজ’। প্রথম ডোজের কাজ হচ্ছে শরীরের ভিতরে নিষ্ক্রিয় ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে ইমিউন রেসপন্স জাগিয়ে তোলা।
যে মুহূর্তে আপনার প্রতিরোধক্ষমতা বুঝতে পারবে যে বাইরে থেকে কোনও শত্রু শরীরে প্রবেশ করেছে, সে তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেবে। বুস্টিং ডোজের কাজ হচ্ছে এই লড়াইকে আরও শক্তিশালী করে তোলা। তাই দু’টি ডোজ আপনাকে নিতে হবেই। তবে খুব কাছাকাছি নিলেও কিন্তু লাভ হবে না – দুর্বল অ্যান্টিবডি প্রোটেকশন তৈরি হবে।
প্রসঙ্গত, জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষ একটি সিঙ্গল ডোজ ভ্যাকসিন বাজারে আনতে চলেছে কিছুদিনের মধ্যেই, এখনও তার ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ হয়নি।
প্রথম ডোজ নেওয়ার পর কি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে?
হ্যাঁ থাকে। এমন হতেই পারে যে ভ্যাকসিন নেওয়ার আগেই আপনার শরীরে করোনার জীবাণু প্রবেশ করেছিল — টিকা নেওয়ার পরে তার লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। অথবা ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেই জীবাণু ঢুকেছে শরীরে। তাতেও ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলুন। সুস্থ হয়ে গেলে তাঁর পরামর্শমতোই সেকেন্ড ডোজ নিয়ে নিন। দু’টি ডোজ নেওয়ার পরেও কিন্তু সংক্রমনের আশঙ্কা থেকে যায়। তাই মাস্ক ব্যবহার করুন, মেনে চলুন অন্যান্য কোভিড প্রোটোকল।