কিছুদিন আগেও ধরেই নেওয়া হত যে একটি মেয়ের জন্মই হয়েছে সন্তান উৎপাদনের জন্য – মাতৃত্বই তার জীবনের চরম সাফল্য। আজকাল অবশ্য কেউই আর তেমনটা ভাবেন না, আলোকপ্রাপ্ত সব পরিবারেই সদ্য মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়া মেয়ের খুব ভালো যত্ন নেওয়া হয়। তাকে এমনভাবেই সাহায্য করা হয় যাতে সে তাড়াতাড়ি নিজের পুরোনো রুটিনে ফিরে আসতে পারে।
তবে তাই বলে তাড়াহুড়ো করবেন না। এ কথা সত্যি যে মা হওয়ার পর শরীর বিরাট পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। তাই মা, শাশুড়ি বা পরিবারের বাকি সবাইয়ের সাহায্য নিন। সব কাজ নিজে একা করতে যাওয়া উচিত নয় একেবারেই, তাতে অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।
মা হওয়ার সময়ে শরীরের প্রচুর ধকল যায়, তাই সন্তানের জন্মের পর ভালো করে বিশ্রাম নেওয়াটা জরুরি। ঘুমোন, পুষ্টিকর খাবার খান। এমনিতেই বাচ্চার জন্য রাতবিরেতে উঠতে হবে। তাকে বার বার ফিড করাতে হবে, তাই খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো না হলে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
সন্তান জন্মের পরও শরীরে হরমোনাল লেভেলে নানা ওঠাপড়া চলে, তাই কারও কারও এই সময়ে ডিপ্রেশন হয়। যদি দেখেন যে মনের মধ্যে অজানা কোনও কারণে খুব দুঃখ বাসা বাঁধছে, দিনের পর দিন রাতে ঘুম আসছে না, তা হলে একটু সতর্ক হোন। সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে সমস্যাটা না কমলে বা সন্তানের প্রতি কোনও টান তৈরি না হলে কিন্তু ব্যাপারটা ডিপ্রেশনের জায়গায় চলে যেতে পারে।
খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠবেন না। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করুন, অন্ততপক্ষে আপনার মাসিক ঋতুস্রাব স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা দরকার। বেশি করে ফল, শাক সবজি, ডাল খান, ব্রেস্ট ফিড করুন। হাঁটাচলা বা সাঁতার কাটার মতো অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে যুক্ত হোন – ওজন কমতে বাধ্য।
সাধারণত বাচ্চা সামলাতে এতটা সময় চলে যায় যে স্বামীর দিকে বা নিজের চেহারা দিকে তেমন নজর দেওয়া যায় না। এটা বেশিদিন চলতে দেবেন না। বাচ্চাকে মা বা শাশুড়ির জিম্মায় খানিক সময়ের জন্য রাখুন, আগের মতো সময় কাটান স্বামীর সঙ্গে। আপনাদের সম্পর্ক ভালো না থাকলে কিন্তু বাচ্চার দেখভাল করতে সমস্যা হবে।