আপনার হাড় যত বেশিদিন সুস্থ থাকবে, তত টানটান থাকবে শরীরের কাঠামো। হাঁটু-কোমরের ব্যথা-বেদনা ভোগাবে না, ইচ্ছেমতো চলাফেরা করতে পারবেন। তবে একদিন অনেকক্ষণ ব্যায়াম করলেই কিন্তু আপনার হাড়ের স্বাস্থ্য হঠাৎ করেই ভালো হয়ে যাবে না, খুব কম বয়স থেকেই সচেতন হওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় মা কতটা পুষ্টিকর খাবার খেয়েছিলেন তার উপর ভিত্তি করে মানুষের হাড়ের স্বাস্থ্য নির্ধারিত হয়। মায়ের পুষ্টিতে ঘাটতি না থাকলে বাচ্চাও সুস্থ হয়। ভালো হাড়ের গ্রোথ হওয়া সম্ভব 30-35 বছর বয়স পর্যন্ত। তার মধ্যে যাঁদের বয়স, তাঁরা রোজ হাড়ের যত্ন নিন।
পুষ্টিকর খাবার খান, তার মধ্যে যেন শাকসবজি আর ফল থাকে। নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ব্যায়াম করুন। ধূমপান আর কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ার অভ্যেস হাড়ের স্বাস্থ্যক্ষয়ের কারণ — পারলে এগুলি এড়িয়ে চলুন। মানুষের শরীর কিন্তু নাগাড়ে দশ-বারো ঘণ্টা বসে কাটানোর জন্যে তৈরি হয়নি। তাই কাজের চাপ যতই হোক না কেন, মাঝে মাঝেই উঠুন, খানিকটা হাঁটাচলা করুন, তার পর ফিরে এসে ফের কাজে বসুন। টানা বসে টিভি দেখাও খুব খারাপ অভ্যেস।
যাঁরা কোনওদিন খেলাধুলো করেননি বা পরিবারে অস্টিওপোরোসিসের ইতিহাস আছে, তাঁদের হাড় এমনিতেই কমজোরি হয়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাও বাড়ে। অতিরিক্ত মদ্যপান বা ধূমপান, কিডনির অসুখ বা থাইরয়েড হরমোনে গন্ডগোল, সেলিয়াক ডিজ়িজ়ের মতো সমস্যাও হাড়ের স্বাস্থ্যরক্ষার ক্ষেত্রে খুব একটা অনুকূল নয়।
মেনোপজ়ের আশপাশের পাঁচ-সাত বছরে মেয়েরা তাদের বোন ডেনসিটির ২০% পর্যন্ত হারাতে পারে। যাঁরা কোনও শারীরিক সমস্যার জন্য নিয়মিত স্টেরয়েড নিতেন, কেমোথেরাপি হয়েছে, মৃগীর মতো রোগের চিকিৎসা চলছে, তাঁদেরও কিন্তু অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি।
আপনার ওজন ক্রমশ কমছে এবং কোনও কারণ ছাড়াই ঋতুচক্র অনিয়িমত হয়ে পড়েছে? তা হলে অতি অবশ্যই একবার ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৪০-এর কাছাকাছি, তাঁদের ক্ষেত্রে এ নিয়মটা মানা বাধ্যতামূলক। কোমরে বা পায়ে মাঝে-মধ্যেই তীব্র ব্যথার ভাব টের পান?
ছোট-খাটো চোট-আঘাতেও হাড় ভেঙে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়? ক্রমশ বদলাচ্ছে পশ্চার? অতিরিক্ত ট্রেনিং করছেন জিমে? বা একেবারে কোনও ব্যায়ামের সঙ্গেই আপনার কোনও সম্পর্ক নেই? তা হলে আজই সাবধান হোন।
ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি দেখতে হবে যেন শরীরে যথেষ্ট রোদ লাগে। সেই সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে খেতে হবে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট। আমরা ঠিক যেভাবে ত্বক বা চুলের যত্ন নিই, সেই মানসিকতা থেকেই হাড়ের যত্ন নেওয়ার কাজটাও শুরু করতে হবে আজ থেকেই।