বিয়ে খুব ঠুনকো কারণে ভেঙে যায় আজকাল। তাই তা মজবুত করে তোলার জন্য নানা উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টাও চলছে। অনেকে মনে করেন, বিয়ের আগে বাধ্যতামূলক রক্তপরীক্ষার পাশাপাশি যদি ম্যারেজ কাউন্সেলারের দ্বারস্থ হওয়া যায়, তা হলে ভালো থাকে সম্পর্কের স্বাস্থ্য। জানতে চান তা কীভাবে সম্ভব?
যৌন পছন্দ সম্পর্কে ধারণা
বিয়ের সঙ্গে যৌনতার সম্পর্ক একান্ত গভীর – কিন্তু আমাদের দেশে যা সসামাজিক কাঠামো, তাতে এই বিষয়টিকেই সবচাইতে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। কাউন্সেলাররা কিন্তু এ বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। মনে রাখবেন, যৌন পছন্দ-অপছন্দ ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হয়, কোনওটাই ভালো বা খারাপ নয়। কীভাবে একে অপরের যৌন চিন্তাভাবনার শরিক হোয়া যায়, তা জেনে নিলে ভুল বোঝাবুঝি কম হয়।
শুনতে শেখা
সঙ্গীর কথা শোনা, তা উপলব্ধি করার মধ্যে দিয়ে সম্পর্কের অনেক জট খুলে যায়। বহু জটিলতা যে স্রেফ আলোচনা করেই সমাধান করা যায়, তা কাপল কাউন্সেলিং সেশন করলেই আপনারা বুঝতে পারবেন। কেউ কাউকে দোষারোপ না করে ঠান্ডা মাথায় পরস্পরের কথা শুনলেই সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে, আপনারাও পাবেন সুখী ভবিষ্যৎ।
ধৈর্য ধরতে শেখা
যতদিন আমরা সিঙ্গল থাকি,ততদিন নিজের মতো করে জীবন কাটানোয় কোনও বাধা থাকে না। কিন্তু বিয়ের পর যখন প্রতিটি মুহূর্ত আর একজনের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়, তখনই সংঘাত দেখা দেয়। ধৈর্য না থাকলে এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। প্রি-ম্যারিটাল কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে আপনারা একে অপরের অভ্যাস, স্বভাবগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন, ফলে মানিয়ে নেওয়া সহজ হয়।
সঙ্গীকে ঘনিষ্ঠভাবে জানা
আগে থাকতে আপনাদের পরিচয়, এমনকী প্রেম থাকলেও এক ছাদের নিচে থাকতে শুরু না করা পর্যন্ত পরস্পরকে পুরোপুরি জেনেবুঝে ওঠা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রি-ম্যারিটাল কাউন্সেলিংয়ের সময় পার্টনারের মনের অনেক গোপন দিকের সন্ধান আপনি পেয়ে যেতে পারেন। পরস্পরের প্রতি অনেক ভুল বোঝাবুঝি কাটাতেও সাহায্য করে প্রাক-বৈবাহিক কাউন্সেলিং।
সম্পর্কের জটিলতাগুলো চেনা
অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে নানা জটিলতা ঢুকে পড়ে যা নিয়ে আলোচনা করতে কেউই স্বচ্ছন্দবোধ করেন না এবং তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সম্পর্কটাই। বিয়ের আগে কাউন্সেলিং করালে এই জটিলতাগুলো আগে থাকতে বোঝা যায়। তা ছাড়া মনের মধ্যে বিয়ে বা সম্পর্ক সংক্রান্ত কোনও উদ্বেগ বা ভয় লুকিয়ে থাকলেও তা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে।
সাংসারিক জটিলতা কাটিয়ে তোলা
দৈনন্দিন জীবনের ছোটখাটো সমস্যা অনেক সময় বড়ো জটিলতার চেহারা নিতে পারে। এ সব সমস্যাকে মূলে বিনাশ করা যায় প্রি-ম্যারিটাল কাউন্সেলিংয়ের সাহায্যে। যেমন সাংসারিক খরচখরচা কীভাবে ভাগ করা হবে, পেশাগত কারণে পার্টনারের একজনকে অন্য শহরে চলে যেতে হলে কী হবে, এমন নানা প্রশ্নের উত্তর আপনারা বিয়ের আগে আলোচনার মাধ্যমে পেয়ে যেতে পারেন। ফলে বিয়ের পিঁড়িতে বসার সময় আপনাদের দু’জনেই থাকবেন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী যা আপনাদের সাংসারিক জীবনকে আরও শান্তির আর আনন্দের করে তুলবে।