এবার শীত আসতে চলেছে সময়ের আগেই – অন্তত তেমনটাই পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর। বাতাসে বিলক্ষণ শীতের কামড় টের পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখন থেকেই কিছু কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা একান্ত জরুরি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু ক্রনিক শারীরিক সমস্যাও বাড়ে। এ বছর বা বলা ভালো করোনা ভাইরাসের দাপট যতদিন থাকবে, ততদিন কিছু কিছু বিষয়ে সাবধান হওয়া ছাড়া উপায় নেই!
শীতকালে তাপমাত্রা যত কমে, তত বাড়ে আপনার রক্তচাপ। তাই যাঁদের হাই ব্লাড প্রেশারের সমস্যা আছে, তাঁরা খুব সাবধানে থাকুন। বাড়তি রক্তচাপ এমন একটি কো-মর্বিডিটি যা কোভিড ১৯-অসুখটিকে আরও জটিল করে তোলে। যত বেশি ঠান্ডা পড়ে, তত সংকুচিত হয় আপনার রক্তবাহী নালীগুলি। তার মধ্যেও রক্ত চলাচল যথাযথ রাখতে গেলে শরীরকে রক্তচাপ বাড়াতেই হয়। তাই সাবধান না হলে কিন্তু হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে।
শীতকালে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কয়েকটি সহজ উপায় অবশ্য আছে। প্রথমত, যাঁদের রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সমস্যা আছে, তাঁরা বাইরের কাজ এড়িয়ে চলতে পারলে ভালো হয়। খোলা আকাশের নিচে ঠান্ডায় আপনি যত বেশিক্ষণ থাকবেন, তত সংকুচিত হবে রক্তনালী, তত বেশি বাড়বে রক্তচাপ। তাই ঘরের মধ্যে বা নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় থাকার চেষ্টা করুন। তাতে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকবে।
দ্বিতীয়ত, লেয়ার করে পোশাক পরতে হবে। কখনও গরম লাগলে না হয় এক-আধটা আস্তরণ খুলে রেখে দেবেন! কিন্তু গ্লাভস, মাফলার, টুপি ছাড়া বাইরে বেরনোটা উচ্চ রক্তচাপে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বোকামি। তিন নম্বর, পুষ্টিকর, সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। শীত পড়েছে বলেই একগাদা তেল-মশলা দিয়ে গরগরে করে রাঁধা খাবার খেলে হিতে-বিপরীত হতে পারে। চার, খুব বেশি চা-কফি বা অ্যালকোহল থেকেও দূরে থাকা উচিত। এর প্রতিটিই শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়। পাঁচ, যাঁরা জিমে যান নিয়মিত, তাঁরাও খুব ঠান্ডা দিনগুলোয় হেভি ওয়েটলিফটিং করবেন না। হৃদয়ে বাড়তি চাপ পড়ে, এমন কোনও কাজই করা উচিত নয়।
এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা জেনে রাখা দরকার। আচমকা আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেও কিন্তু রক্তচাপ বাড়ে। শীত পড়েছে বলে একেবারেই নড়াচড়া হচ্ছে না, কিন্তু প্রচুর খাওয়াদাওয়া করে ওজন বাড়িয়ে ফেলেছেন? সেক্ষেত্রেও কিন্তু হুট করেই রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে সঠিক ডায়েট ও প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম দুটো দিকেই খেয়াল রাখতে হবে।
সবচেয়ে বড়ো কথা, অধিক রক্তচাপের সমস্যা থাকলে কিন্তু নিয়মিত ব্লাড প্রেশার মাপাতে হবে। আপনার চিকিৎসক যে সব নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে বলেছেন, সেগুলি মেনে চলুন। তা হলে শীতও আপনাকে কাবু করতে পারবে না মোটেই।