কোভিডে স্বাদ আর গন্ধের বোধ চলে যায়, ইনফেকশন কমে গেলে ধীরে ধীরে আবার তা ফিরে আসে – এটা একটা সাধারণ ধারণা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেও কোনও খাবারই মুখে রুচছে না – বা খাবারের গন্ধ নাকে গেলেই বমি এসে যাচ্ছে।
আসলে মিউট্যান্ট ভাইরাসের কারণে যে কোভিড হয়েছে এবার, তাতে রোগ সারতে অনেকটা সময় লাগছে। এক একজনের ক্ষেত্রে এক এক রকম লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কারও শরীরে ব্যথা-বেদনা বাড়ছে, কেউ বা কিছুতেই পুরোনো এনার্জি ফিরে পাচ্ছেন না। কারও একেবারেই খাবার ইচ্ছে থাকছে না। না খেলে কিন্তু আপনি দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়বেন, তাই চেনা খাবারের তালিকায় কিছু পরিবর্তন এনেও সুস্থ থাকার চেষ্টা করতে হবে।
নাসাল মিউকোসায় কোনও ইনফেকশন বা ইনফ্ল্যামেশন থাকলে খাবারের স্বাদ চলে যায় অনেক সময়ে। প্রদাহ থাকার অর্থ হচ্ছে, আপনার শরীর ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে – তাই খাবারের জোগান নিয়মিত রাখুন এবং হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়ার উপর জোর দিন।
খাবারে স্বাদ না পেলে আপনি প্রথমেই একটু লেবু যোগ করে দেখুন তাতে – অ্যাসিডের স্বাদ খুব স্ট্রং, তা জিভে ধরা পড়বেই। তা ছাড়া মুখ শুকনো হয়ে যাওয়া বা লালা নিঃসরণ কমে যাওয়ার মতো ঘটনাও দস্বাদ না পাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। অ্যাসিদ কিন্তু লালা বেরনো ফের শুরু করতে পারে।
বেশি চিনি বা নুন খেলে সুগার-প্রেশারের সমস্যা হতে পারে – তাই স্বাদের জন্য তা করতে যাবেন না। তার চাইতে গোলমরিচ, জিরে, কাঁচালঙ্কা, রসুন, ধনেপাতা ইত্যাদি দেওয়ার কথা ভাবতে পারেন, তা হজমের পক্ষেও সহায়ক।
অনেক সময়ে প্রোটিনের গন্ধ সহ্য হয় না, বা বাসনপত্রের মেটালিক গন্ধ নাকে লাগে। সেক্ষেত্রে কিছুদিন কাচের বাসনে খাওয়ার চেষ্টা করুন, কোনও ফয়েল প্যাক থেকে খাবার খাবেন না। মাছ-মাংস বা দুধ-ডিম ছাড়াও প্রোটিনের নানা সোর্স আছে, আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে তেমন কিছু বেছে নিতে পারেন।
নানা ধরনের খাবার ট্রাই করে দেখতে হবে। নোনতা, ঝাল, মিষ্টি, তেতো, টক – সব ধরনের খাবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ট্রাই করে দেখতে হবে। সেই সঙ্গে ঠান্ডা-গরম খাবার, ফল-সবজিও দেখা উচিত। কারও হয়তো পাতলা খিচুড়ি ভালো লাগবে, কারও গরম স্যুপ, কারও ঠান্ডা স্যালাড – সব কিছু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেয়ে দেখতে হবে।
মনে রাখবেন, এই সমস্যাটা একেবারেই সাময়িক, কিছুদিনের মধ্যেই কেটে যাবে। তাই বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। খালি ভাজাভুজি বা কেক-পেস্ট্রির মতো কিছু খাবেন না, তা হলে পুষ্টির অভাব হবে।